সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৯ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ প্রবাসী নারীর সাথে হৃদয়ঘটিত সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং মুঠোফোনে তার অশ্লীল ভিডিও ধারন করে ব্লাকমেইল করে আসছিলেন বরিশালের মাধবপাশা গ্রামের সাকিব খান (২৪) নামের এক যুবক। পরবর্তীতে স্থানীয় ওই যুবকের কাছ থেকে অশ্লীল ভিডিও সংগ্রহ করে একই গ্রামের খলিল বেপারী (৩৫) এবং রুবেলও নারীর কাছে অর্থ দাবি করেন। ভুক্তভোগী নারীর এমন অভিযোগের প্রেক্ষাপটে বরিশাল ১০ আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়নের (এপিবিএন) সাইবার ক্রাইম টিম ২৪ ঘণ্টার রুদ্ধদার অভিযান চালিয়ে প্রতারক সাকিব এবং খলিলকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার পরবর্তী শনিবার সন্ধ্যা রাতে শহরের ত্রিশগোডাউনস্থ আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়নের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁইয়া ঘটনার বিষদ বর্ণনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল ১০ এপিবিএনের কমান্ডিং অফিসার মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, বরিশালের স্থানীয় বাসিন্দা প্রবাসী নারীর সাথে তার স্বামী রাকিবের পারিবারিক কলহ চলছিল। স্বামীর সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে মাধবপাশা গ্রামের মৃত লিটন খানের ছেলে সাকিব খানের সহায়তা চান ওই নারী। এই যোগাযোগের বদৌলতে প্রবাসী নারীর সাথে সাকিব হৃদয়ঘটিত সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর তারা প্রায়শই ইমোসহ স্যোশাল মিডিয়ায় ভিডিও কল দিয়ে কথা বলতেন। একপর্যায়ে নারীকে প্রেম প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ভিডিও কল করে তার বেশকিছু অশ্লীল ভিডিও ধারন করেন। এই নোংরা ভিডিও সাকিব তার এক বন্ধু খলিল বেপারীকে সরবরাহ করেন এবং তাদের যৌথ পরিকল্পনায় প্রবাসী নারীর ইমো নম্বরে পাঠিয়ে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরবর্তীতে তাদের এই অপকর্মে স্থানীয় রুবেল নামের আরও এক যুবক সম্পৃক্ত হন। এবং তারা ধাপে ধাপে নারীর কাছে তিন লক্ষ টাকা দাবি করেন।
এপিবিএনের অধিনায়ক জানান, প্রবাসী নারী ব্লাকমেইলের শিকার হচ্ছেন, এই বিষয়টি বরিশালে অবস্থানরত তার বোনের স্বামী সোলাইমানকে অবহিত করেন এবং তিনি স্থানীয় থানা পুলিশের কাছে আইনগত সহায়তা চাইতে বলেন। পরবর্তীতে সোলাইমান সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দর থানা পুলিশে অভিযোগ করেন, এই অভিযোগটি বরিশাল ১০ এপিবিএন শুক্রবার হাতে পেয়ে তদন্ত শুরু করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটির এসপি মোল্লা আজাদ হোসেনের নেতৃত্বে এএসপি উজ্জ্বল কুমার দে এবং পরিদর্শক শাহ মো. ফয়সাল আহম্মেদ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হন। এবং ২৪ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধ অভিযানে এপিবিএনের টিমটি অভিযুক্ত সাকিব এবং খলিলকে গ্রেপ্তারে সফলতা পেলেও পলাতক রয়েছেন তাদের সঙ্গী রুবেল।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা জানান, নারীর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভিডিও কলে অশ্লীল ভিডিও এবং স্থিরচিত্র ধারন করে প্রতারক সাকিব খান ব্লাকমেইল করে আসছিলেন। স্থানীয় খলিল বেপারী এবং রুবেলও এর সাথে জড়িত রয়েছেন। এই তিনজনের মধ্যে দুইজন সাকিব এবং খলিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন রুবেলকেও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
গ্রেপ্তার সাকিব এবং খলিলকে সংশ্লিষ্ট বরিশাল মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়, জানান এপিবিএন অধিনায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন।’
Leave a Reply